স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছিলেন, ফিরলেন ৩২ বছর পর

কিশোরগঞ্জ থেকে

স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে বাড়ি ছেড়েছেন মুর্শিদ মিয়া। এরপর 32 বছর কেটে যায়। বাড়ির লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। একপর্যায়ে বাড়ির লোকজন তাকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেয়। স্ত্রীও বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। তাদের কোন সন্তান নেই। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে খুঁজে পান স্বজনরা।

স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছিলেন, ফিরলেন ৩২ বছর পর
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছিলেন, ফিরলেন ৩২ বছর পর
পুলিশের সহায়তায় ৩২ বছর পর দেশে ফিরেছেন মুর্শিদ মিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরটেকী গ্রামে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় বাড়ির লোকজন তাকে নরসিংদীর বেলাব উপজেলা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে বাড়িতে নিয়ে যায়।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৩২ বছর আগে পারিবারিক বিষয়ে রাগ করে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান মুর্শিদ মিয়া। বাড়ির লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। একপর্যায়ে স্বজনসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজার আশা ছেড়ে দেন। নিঃসন্তান স্ত্রীও গৃহত্যাগ করেন।

মুর্শিদের ভাগ্নে আব্দুল হাকিম বলেন, দীর্ঘদিন পর চাচাকে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত ও আনন্দিত। চাচার স্ত্রী-সন্তান নেই। অনেক জমি আছে। তারা চেষ্টা করবে চাচা যেন জীবনের শেষ সময়টা তাদের সাথে ভালোভাবে কাটাতে পারে।

অন্যদিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মুর্শিদ মিয়া নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের সাহাজ উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে মজুরের কাজ করতেন। কয়েক মাস ধরে তিনি অসুস্থ। তিনি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন:‘ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের ছাড়া দানব এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে’

 কয়েকদিন আগে ধুকুন্দি গ্রামের একজন মুর্শিদ মিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। স্বজনরা ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে চিনতে পারেন। মুর্শিদের ভাতিজা আব্দুল হাকিমসহ বেশ কয়েকজন ওই গ্রামে গিয়ে তাকে নিয়ে আসেন। কয়েকদিন আগে পাশের গ্রামের একটি মসজিদে শ্রমিকের সংগ্রহ করা সাড়ে চার লাখ টাকা দান করে আলোচনায় আসেন এই মুর্শিদ।

মুর্শিদ মিয়া বলেন, আমার বয়স এখন ৭০ বছর। অনেক দিন বাড়ি থেকে দূরে ছিলাম। আমি আমার বাড়িওয়ালার (স্ত্রী) সাথে রাগ করে চলে গেলাম। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, বাড়ি ছেড়ে যাওয়া খুব কঠিন। কিন্তু আমি যেখানে ছিলাম তারা আমার খুব যত্ন নিত, বাড়ির অভাব তারা বুঝতে পারেনি। একপর্যায়ে মনে হলো বাড়ি ফিরতে পারব না। ঈশ্বর আমাকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাসায় এসে দেখি আমার বাড়িওয়ালা (স্ত্রী) অনেক আগেই চলে গেছে, তার কোন হদিস নেই। তা ছাড়া আমার কোনো জামাই নেই, আমার ভাগ্নে আছে। আমি সারা জীবন তাদের সাথে থাকব।

পাকুন্দিয়া থানার ওসি মোঃ আছাদুজ্জামান জানান, ফেসবুকের সুবাদে নিখোঁজের ৩২ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরেছেন মুর্শিদ মিয়া। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বলা হয়েছে যে ত্রাণ সম্পত্তির তার অংশ তাকে পৌঁছে দিতে হবে। তারা আমাদেরকে আরও বলেছে যে তারা মামার খুব যত্ন নেবে।

প্রসঙ্গত, আসাদুজ্জামানের এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হলে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

No comments

Powered by Blogger.