শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা সামসুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।


শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা সামসুল
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা সামসুল
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পর দেশ ও জাতি ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। কিন্তু মাফিয়াদের ষড়যন্ত্র এখনো থামেনি। তাই বিজয়কে সুসংহত করতে শ্রমিক-গণ ঐক্যের বিকল্প নেই।

রামনার ইঞ্জিনিয়ার্সে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অর্জিত বিজয় রক্ষা ও নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে শ্রমিক নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ড.

ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা মহিবুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক সমাজ দেশ ও জাতির জন্য অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। দেশ ও জাতির যেকোনো ক্রান্তিকালে শ্রমিক সমাজ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে। আমাদের বাড়ি-গাড়ি তৈরি হয়েছে আমাদের প্রান্তিক শ্রমিকদের হাতে। কিন্তু তাদের অধিকারের কথা বলার কেউ নেই। মূলত আমাদের শ্রমিক গোষ্ঠীই সবচেয়ে বঞ্চিত। মালিক শ্রেণী শ্রমনীতির ব্যাপারে খুবই উদাসীন। আট ঘণ্টার বেশি কাজ করার জন্য কোনো ওভারটাইম ভাতা দেওয়া হয় না। যা খুবই অমানবিক।

তিনি শ্রমিক নিয়োগ পদ্ধতির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, শ্রমিকদের কোনো নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। ফলে তারা যে কোনো সময় মৌখিক নোটিশ দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করছেন। আমাদের এই দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি না মেনে শ্রমিকরা আজ অবহেলিত ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তা ইসলামী আইন ও শ্রমনীতি অনুসরণ করেই ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখা সম্ভব। আমাদের কষ্টার্জিত বিজয়কে ধ্বংস করার জন্য একটি দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী চালক উঠে এসেছে। তাই এই জয় ধরে রাখতে মাঠে স্বাধীন প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।

আরও পড়ুন:গণভবন পরিদর্শন শেষে ৩ উপদেষ্টা/গণভবনকে জাদুঘরে রূপ দিতে কালকের মধ্যে কমিটি

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, এ বিপ্লব শত বছরের ইতিহাসে আরেকটি শ্রেষ্ঠ বিপ্লব। বিজয় ঠেকাতে হত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভাই-বোনের মধ্যে বিভাজন হয়েছে। জাতি বিভক্ত হয়েছে। আর এই ঐতিহাসিক বিজয়ের মধ্য দিয়ে দলমত নির্বিশেষে আমাদের মধ্যে নতুন সেতুবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই জয় আমাদের ধরে রাখতে হবে। নতুন সরকারকে স্বৈরাচার থেকে দেশকে মুক্ত করতে যুক্তিসঙ্গত সময় দিতে হবে। তবেই দেশে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাফল্য ধরে রাখতে হবে। শ্রমিকদের কষ্টের বিনিময়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন করছি। মানব রচিত আইন বাদ দিয়ে কুরআনের বিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করতে হবে। আর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সর্বস্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি আমীর আবদুর রহমান মুসা, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের কার্যকরী পরিষদের সদস্য ইয়াছিন আরাফাত, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.