পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন ও স্ত্রীর ৪ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

ফরিদপুর থেকে

ফরিদপুরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে প্রায় চার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন ও স্ত্রীর ৪ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ
পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন ও স্ত্রীর ৪ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ
এর আগে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আকবর আলী খানের নির্দেশে দুদক সম্পত্তি জব্দ করে।

দুদকের ফরিদপুর জেলা কার্যালয় জানায়, অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ফরিদপুর দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকান তল্লাশি করে স্থাবর-অস্থাবরসহ প্রায় চার কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া যায়।

 ফরিদপুর দুদুক এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে গত ৭ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৪ সেপ্টেম্বর সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ সেপ্টেম্বর দুদক সম্পত্তি জব্দ করে। ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে।

জব্দকৃত স্থাবর সম্পত্তি সবই পুলিশ কর্মকর্তা তুহিনের স্ত্রী জামিলা পারভীনের নামে। এর মধ্যে খুলনা, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় তার বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৮১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা। এছাড়া ব্যাংকে টাকা ও স্থায়ী আমানত রয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার ২৯১ টাকা। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক ফরিদপুর শাখার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩৯ লাখ ৬৮ হাজার ৯০০ টাকা। ওই ব্যাংকের আরেকটি স্থায়ী আমানত ৪০ লাখ টাকা।

দুদক জানায়, তুহিন লস্করের স্ত্রী জমিলার কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও ভুয়া ব্যবসা দেখিয়ে এই সম্পদ অর্জন করেছেন। জব্দকৃত ৩ কোটি ৮৭ লাখ ২৪ হাজার ৮৪১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে মাত্র ২৬ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯১ টাকা ব্র্যাক ব্যাংক ফরিদপুর শাখায় রয়েছে টিআই তুহিন লস্করের নিজের নামে।

জব্দকৃত স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তুহিনের স্ত্রীর খুলনার হাইজিং এস্টেট এলাকার গোয়ালপাড়া মৌজায় ১ দশমিক ৮০৫ খাটা জমিতে দুই ইউনিট, পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে যার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা, খুলনার খলিসওয়ার্থপুরের গোয়ালপাড়া মৌজায় ১ দশমিক ৮০৫ কাটা জমি। প্রায় ৪২০,০০০ টাকা।

 ফরিদপুর শহরের ১১৬ নং কমলাপুর মৌজায় এক হাজার ২০০ বর্গফুট ফ্ল্যাট আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা, নগরীর ১১৯ নং হাবেলী গোপালপুর মৌজায় ১২০০ বর্গফুট ফ্ল্যাট আনুমানিক ৪০ লাখ টাকা, হাবেলী গোপালপুর শহরের হাবেলী গোপালপুর মৌজায় ০০.৩৫ শতাংশ জমি।

 আরও পড়ুন:আ.লীগের আমলে গুম-নিখোঁজদের ফিরিয়ে দিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, গোপালগঞ্জ সদরের খাতারা মৌজায় ৪০ শতাংশ জমির মূল্য ১ লাখ টাকা, একই মৌজায় ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ মূল্যের ৯ লাখ ১৮ হাজার ২২৫ টাকা এবং ৫ দশমিক ২ শতাংশ জমির মূল্য ৬ লাখ ১২ হাজার ২২৫ টাকা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর দুদকের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, টিআই তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রীর নামে আরও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে আমাদের ধারণা। এ কারণে এই দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।

তিনি বলেন, তুহিন বা তার স্ত্রী যাতে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে না পারে বা স্থাবর সম্পত্তি অন্য নামে হস্তান্তর করতে না পারে সেজন্য সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে টিআই তুহিন লস্কর বলেন, আমার সব সম্পত্তি বৈধ। তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য উদঘাটন হবে।

No comments

Powered by Blogger.